চিত্র ঋণ : dreamstime.com |
আসল বক্তব্যে আসার আগে একটা লেখা পড়ি চলুন…
খনো হয়েই যাচ্ছে মানে কোন ইনপুট না দিলেও "f" অক্ষরটি এমনি এমনিই লেখা হচ্ছে। ইংরেজি "f" দিয়ে শুরু গালাগালটি দিলেও থামছে না। তাই কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুললাম। আমিও "f" অক্ষরটি প্রেস করতে থাকলাম। থেমে গেল। যাক একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই ফেএকটা অসুস্থ ল্যাপটপ নিয়ে, ১ বছর ৬ মাস পর লিখতে বসলাম। ল্যাপটপের মাউস আর কীবোর্ড কাজ করে না। তাই এক্সটার্নাল মাউস আর কীবোর্ড দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। কিন্তু এখানেও একটা সমস্যা। কীবোর্ড এ কখনো টাইপ হচ্ছে আবার কখনো হচ্ছে না। আবার কলেছি। এই অসুস্থ কীবোর্ড দিয়েই কাজ চালাবো আর রেগুলার কিছু পোস্ট করবো।
এই দেড় বছরে অনেককিছুই
ঘটেছে। আমার জীবনে ,
আমার চারপাশে ,
রাজ্যে ,
দেশে। যাক দেশ
রাজ্য নিয়ে বেশি কচলাবো না।
আমি এবং আমার চারপাশ নিয়ে
সীমাবদ্ধ থাকি আপাতত।সত্যজিৎ
রায়ের "সীমাবদ্ধ"
দেখেছেন কি?দেখতে পারেন।
খুব সুন্দর করে "সীমাবদ্ধ"
শব্দটি define
করা আছ। চারিদিক
থেকে কিশোর কুমারের কণ্ঠস্বর
ভেসে আসছে। আজকে কালীপুজোর
আগের দিন। আজকে ২৩র্ড অক্টোবর,
২০২২। একটা জিনিস
খেয়াল করেছেন কিনা জানি না,কালীপুজো হোক
বা দুর্গাপূজো, বছরের পর বছর
প্রায় প্রতি প্যান্ডেলে একই
গান বাজে।এটা কিকরে যে সম্ভব
হয় জানি না। তবে এটা মানতেই
হবে লতা -
আশা -
কিশোর -হেমন্ত
-মান্না
-আরতিএঁরা কিন্তু আজও নিজেদের
বাজারটা ধরে রেখেছেন।
গোটা পাড়া অনেক রকম রংএর আলোতে সেজে উঠেছে। এখানে কালীপুজো বেশ ধুমধাম করে হয়। এখন আর covid সতর্কীকরণের কোন ব্যাপার নেই।গত দুবছর ধরে মানুষজন এই পাল পাব্বনে একদম মেপে ঝুপে আনন্দ করেছিল। এবছর বাঁধন ছাড়া আনন্দের প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। একদম সুদে আসলে তুলে নিচ্ছে। ও, এখন আমি দমদম এ থাকি। covid এর পর কলকাতা ছেড়ে ছিলাম।work from home হত। তাই বাড়ি চলে গেছিলাম। এখন তো রেগুলার অফিস তাই আবার দমদম চলে এসেছি। আমার অফিসের address ও চেঞ্জ হয়েছে।এখন পার্ক স্ট্রিট এ আমার অফিস। তবে এখনো ওই ডিসিপ্লিন ফোর্সেই কাজ করি। যেখানে কেউ ডিসিপ্লিন মানে না।
এখন যে ঘরে থাকি সেটা ৬ তলার ছাদে। ১ RK (Room-Kitchen) আর ব্যালকনি হিসেবে পেয়েছি গোটা একটা ছাদ। ঘরে তিনটে জানালা। প্রচুর বাতাস। মন সবসময় ফুরফুরে। ছাদ আমার ভীষণ প্রিয়। এই ঘরটা পাওয়ার পিছনে একটা মজার (পড়বেন খরচ বাড়ানোর) ঘটনা আছে। সেটাই বলি। দমদমে দালাল ছাড়া ঘর পাওয়া খুব মুশকিল। আগে থেকেই দালালদের সাথে যোগাযোগ করে দমদমে আসি। দালালদের একটা সমস্যা আছে। আপনি যে বাজেটের ঘর দেখতে চাইবেন তার থেকে বেশি বাজেটের ঘর আপনাকে দেখাবেই। যাইহোক সেইরকম অনেক ঘরই দেখালো। কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। অনেকগুলো দেখার পর যখন শরীর আর মন ক্লান্ত তখন একটা ঘর পছন্দ হল আর এটা বাজেটের মধ্যে। যেটাকে বলে সস্তায় পুষ্টিকর। এটাই ফাইনাল করলাম। অন্য আর এক দালালকে কথা দেয়া ছিল। সে বারবারই ফোন করছে। ঠিক করলাম এ যা দেখাবে সেটা দেখে বলবো পছন্দ হচ্ছে না আর তারপর চলে আসবো।
নিশ্চিন্তে "সবিতা" রেস্টুরেন্ট (খুব ভালো খাবার পাওয়া যায়) থেকে খেয়ে তারপর ঘর দেখতে গেলাম। এই ভদ্রলোক তিনটে ঘর দেখালো। তার মধ্যে এখন যেখানে থাকি সেটা একটা। এবং এটা আমার বাজেটের বাইরে। কিন্তু ওই যে ছাদ! ওটা দেখার পর বাজেটের কথা আমি ভুলে গেলাম। এখানেও আরেকটা মজার (পড়ুন দুঃখের) গল্প আছে। গভীর রাতে ছাদ থেকে শান্ত গোটা শহরটার রূপ দেখে মুগ্ধ হতাম আর মনে মনে ভাবতাম, 'আমার শহর'টা নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। যাইহোক এই মনে হওয়া বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। দিন দশেক ঘুরতে না ঘুরতে ছাদে তালা পড়লো! আমি ছাড়াও যে দু একজন ছাদে আসতো, তাদের মধ্যে কেউ একজন ছাদের কার্নিশে জলের বোতল রেখে গেছিলো আর সেটা পথ চলতি কারো মাথার ওপর পরে। তারপর হায় হায় কান্ড! ছাদে তালা। আমার এই শহরের 'সম্রাজ্ঞী ' সাজার ইতি! তবে আমাকে দমানো এত সহজ না। আমার মনের বিস্তার অনেকখানি। যখন জানালা দিয়ে ঘরে চাঁদের আলো ঢোকে তখন মনে মনে আমার চন্দ্রজয় হয় এবং আমি চাঁদের সম্রাজ্ঞী হয়ে যাই।
লেখাটি লিখতে বসেছিলাম অক্টোবরের ২৩ তারিখ। আজকে হচ্ছে নভেম্বরের ৪ তারিখ তবে বছরটা ওটাই আছে মানে ২০২২। Blog এ পোস্ট লিখতে গেলে এরকম সময় লাগে আমার। ডিসিপ্লিন না থাকার ফল। এবার আসি আসল বক্তব্যে...
ব্লগ লেখার ক্ষেত্রে ডিসিপ্লিন না থাকলে কি হবে?
১) ব্লগে রিচ পাওয়া যাবে না।
২) যারা ব্লগ থেকে কিছু ইনকাম করার কথা ভাবছেন, পোস্ট লেখার ক্ষেত্রে ডিসিপ্লিন না থাকলে ইনকাম করার কথা ছেড়ে দিন। মনোরঞ্জনের জন্য লিখতেই পারেন।
৩) পাঠকরা, যাঁরা আপনার ব্লগ নিয়মিত পড়েন তাঁরাও হতাশ হবেন। আপনি পাঠক হারাবেন।
৪) না লিখতে লিখতে কিন্তু না লেখার অভ্যেসটা তৈরি হয়ে যায়। সুতরাং পরে কিছু লিখতে গেলে ভীষন আলসেমি আসবে আর লেখার ইচ্ছেটাই চলে যাবে।
এখন বলি ব্লগ লেখার
ক্ষেত্রে ডিসিপ্লিনড কিভাবে হবেন
১) আপনার চারপাশে ঘটতে থাকা ঘটনা গুলো ভালো করে অবজার্ভ করুন আর সেটা নিয়ে প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখুন।
২) রেগুলার কিছু পোস্ট করবো, এই মাইন্ড সেট টা তৈরি করুন। রেগুলার লিখতে লিখতে নতুন অনেক আইডিয়া পাওয়া যায়। নতুন কিছু লেখার তাগিদ জন্মায়।
৩) বই পড়ার অভ্যাস করুন। তবে চেষ্টা করবেন কিছু কোয়ালিটির লেখা পড়তে। মানে ভালো লেখা যেটা পড়ে নতুন কিছু শিখতে পারবেন।
৪) নতুন কিছু লেখার পর নিজেকে কিছু ট্রিট দিন। সেটা চকোলেট ও হতে পারে। মানে নিজেকে একটু corrupt করুন এই ক্ষেত্রে। এই corruption মেনে নেওয়া যেতেই পারে !
লেখার ক্ষেত্রে ডিসিপ্লিনড না হলে খুব মুশকিল। আমার মত হলে চলবে না। আমি ঠেকে শিখছি। আপাতত এটুকুই মনে হল। আপনাদের কিছু সাজেশন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে লিখবেন। উপকৃত হব।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে !