এত দিন পর্যন্ত জানা ছিল, কোভিড-১৯-এর জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2) ভাইরাস বায়ুবাহিত নয়। এপ্রিল ১৫, ২০২১ তারিখে The LANCET নামের একটি আন্তর্জাতিক জার্নাল এই দাবি নস্যাৎ করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে দাবী করা হয় এই জীবাণু বায়ুবাহিত। এবং তার পিছনে ১০ টি যুক্তিও দেখান তাঁরা।
আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার ৬ গবেষক যুক্ত রয়েছেন এই গবেষণায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং এই দলের প্রধান ট্রিশা গ্রিনহল জানিয়েছেন, তাঁদের দাবির পিছনে অন্তত ১০টি কারণ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে কোভিডের সংক্রমণ পরীক্ষা করে তাঁদের সিদ্ধান্ত, করোনার জীবাণু ছড়ানোর জন্য শুধু বাতাসই যথেষ্ট। ভাসমান জলকণা বা ড্রপলেটস-এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাননি তাঁরা।
এই ১০ টি যুক্তি হল
- সুপার - স্প্রেডার ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে মানুষের আচরণ, কোন পরিসরে ঘটেছে, ঘরের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, এসব খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট শ্বাসপ্রস্বাসে নির্গত জলকণা বা ড্রপলেটস এর মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর সপক্ষে যথেষ্ট প্রমান নেই।
- পাশের ঘরে ছিলেন, সংক্রমিতের মুখোমুখি হননি, তও করোনা আক্রান্ত হন।
- আক্রান্তদের ৩৩ থেকে ৫৯ % উপসর্গহীন। সে ক্ষেত্রে কিভাবে ছড়াচ্ছে ?
- বাইরের তুলনায় ঘরের ভিতরে বেশি সংক্রমণ ঘটছে ।
- হাসপাতাল কর্মীরা PPE পরেও আক্রান্ত হচ্ছেন ।
- কোভিড আক্রান্তের ঘরের বাতাসে ভাইরাস মিলেছে ।
- কোভিড হসপিটালের এয়ার ফিল্টারে ভাইরাস পাওয়া গেছে।
- খাঁচা - বন্দি প্রাণীরা সংক্রমিত হয়েছে এয়ার ডাক্ট থেকে ।
- কোনো গবেষণা এ পর্যন্ত ভাইরাসটি বায়ু বাহিত না হওয়ার পক্ষে প্রমান নেই ।
- ড্রপলেটস এ ভাইরাস ছড়ানোর প্রমান বিশেষ নেই ।
এই দাবি যদি সত্যি বলে প্রমাণিত হয়, তা হলে কোভিডের সুরক্ষাবিধিতেও বেশ খানিক বদল আসতে পারে। যদি সত্যিই বায়ু বাহিত হয় এই জীবাণু, তাহলে আপনাকে সারাক্ষণই মাস্ক পরে থাকতে হবে তা আপনি ঘরে থাকুন বা বাইরে থাকুন। এমনকি ঘুমাবার সময়ও। যে বায়ু প্রাণ বাঁচিয়ে এসেছে, সেই বায়ুই আপনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। যাক এখনই এতো প্যানিক করার মত কারণ নেই। কারণ এখনো পুরোদস্তুর প্রমান হয়নি। তবে সাবধানে থাকতে হবে আমাদের। আপাতত যে কোভিডের সুরক্ষাবিধি আছে তা মেনে চলতে হবে সবাইকে।
তথ্যঋণ : আনন্দবাজার পত্রিকা, The LANCET
আরও পড়ুন :
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে !