দারুন গরমে ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত। তারওপর এই কোরোনার বাজারেও রাস্তাঘাটে, ট্রেনে - বাসে লোকজনের ঠেসাঠেসি, গাদাগাদি ভিড়। অফিস ফেরত আমি। রোদের তাপে মাথা দপদপানি, মাস্কের জ্বালায় শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায়, হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়ি ঢুকতেই হাতে চলে আসে এক গ্লাস অমৃত। আহা ! স্বর্গসুখ একেই বলে। ঢকঢক করে পান করি এই অমৃত, যেন পারলে চিবিয়ে খাই। না, এই অমৃত সমুদ্রমন্থন করে উঠে আসেনি। বাড়িতে পাতা টক দই, নুন, চিনি দিয়ে বানানো শরবত। ঘোল। এই গরমে, "বনলতা সেনের" মতোই আপনাকে দুদন্ড শান্তি দিতে পারে এই ঘোল। শুধু কি আর মনের শান্তি ? শরীরের বেশ কিছু অশান্তিও দূর করে। আসুন জানি সেগুলো।
পেট ঠান্ডা করে
বাঙালির পেট! ঝাল-মশলা খাওয়ার জেরে প্রায় সবসময়ই গরম থাকে। ঘোলে থাকা প্রোটিন সেই মশলাকে হজম করাতে সাহায্য করে। পেট ঠান্ডা করে।
বদহজম রুখে দেয়
খেতে বসলে আমাদের পেটের দিকে নজর থাকে না। গোগ্রাসে গিলি। ব্যাস অ্যাসিডিটি। টপ করে একটি অ্যান্টাসিড না খেয়ে যদি এক গ্লাস ঘোল খাওয়া যায়, তাহলে অ্যান্টাসিডের থেকে ভালো কাজ দেয়।
ভরপুর ক্যালসিয়াম
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। এক কাপ দুধে ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এক কাপ দই-তে থাকে ৪২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। কিন্তু এক কাপ ঘোলে থাকে ৩৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। অর্থাত্ বড় গ্লাসে একগ্লাস ঘোল খেতে পারলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হবে না।
রোগা হতে সাহায্য করে
ঘোল হজমশক্তি বাড়ায়। ফলে বাড়তি ফ্যাট শরীরে জমতে দেয় না। রোজ অনেকটা করে ঘোল খেলে ফ্যাট ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এটা প্রমাণিত সত্য।
পুষ্টিতে ঠাসা
ঘোল খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয় না। ঘোলে প্রচুর পরিমাণে পটশিয়াম ও ভিটামিন বি থাকে। একাধিক মিনারেলস ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্স সমৃদ্ধ ঘোল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ঘুমও ভালো হয়।
কোলেস্টেরল, ব্লাড প্রেসার ও ক্যান্সারের যম
ঘোলে থাকা বায়োঅ্যাক্টিভ প্রোটিন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘোলে থাকা নানা অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ব্লাড প্রেসার কমায়। সঙ্গে ক্যান্সারকেও রুখে দেয়।
ডিহাইড্রেশন হয় না
গরম কালে সঙ্গে এক বোতল ঘোল রাখতে পারলে শরীর শুষ্ক হয় না। ক্লান্তি দূর করে দেয়। কিংবা খুব গরমে ঘর্মাক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এক গ্লাস ঠান্ডা ঘোল খুব উপকারী।
দুধে অ্যালার্জি
দুধে অ্যালার্জি বা ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্ট অনেকেই। দুধ খেলেই অ্যাসিডিটি হয়। সেই সব ব্যক্তিদের জন্য ঘোলের বিকল্প নেই। ঘোলের স্বাদে তাঁদের কোনও অসুবিধা হয় না।
কিভাবে বানাবেন
অনেকে অনেকরকম কায়দা করে বানায়। যেমন আমের ঘোল, গন্ধরাজ ঘোল, লেবু পুদিনার ঘোল, পান ড্রাইফ্রুট ঘোল ও মশলা করিয়েনডার ঘোল, তরমুজ আর গন্ধরাজি ঘোল আরো অনেক রকমের ঘোল। সে সব ঘোল নিয়ে অন্য লেখায় দই ঘোলাঘুলি হবে। আমি যেটা খাই সেটাই এখানে দিলাম।
উপকরণ
পদ্ধতি
এই গরমে ঘোল খান সুস্থ থাকুন।
তথ্যঋণ : এইসময়
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে !